আইন আদালত ডেস্ক :::: সরকারকে অবৈধভাবে উৎখাতের জন্য দেশে সন্ত্রাস, নাশকতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণের অভিযোগ এনে করা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে কেন জামিন দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আসলাম চৌধুরীর করা জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার (৪ ডিসেম্বর) এ রুল জারি করেন।
দুই সপ্তাহের মধ্যে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আসলাম চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার সাকিব মাহবুব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশিরউল্লাহ।
পরে রুল জারির বিষয়টি জানান মাহবুব উদ্দিন খোকন।
গত ১৮ জুলাই বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিনের আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেন।
গত ১৫ মে সন্ধ্যায় রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে আসলাম চৌধুরী ও তার ব্যক্তিগত সহকারী মো. আসাদুজ্জামান মিয়াকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর)। পরে তাদেরকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরদিন ১৬ মে ৫৪ ধারায় (মোসাদ কানেকশনে সরকার উৎখাতে ষড়যন্ত্রের সন্দেহ) গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের দু’জনকে দশদিন করে রিমান্ডে আনার আবেদন জানানো হয়। আদালত সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর গত ২৬ মে আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে গুলশান থানায় দায়ের করা হয় রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলাটি। দণ্ডবিধির ১২০ (বি), ১২১ (৩) ও ১২৪ (এ) ধারায় ডিবি’র ইন্সপেক্টর গোলাম রাব্বানী বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
সরকার উৎখাতে ষড়যন্ত্রের সন্দেহে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় বলা হয়, আসলাম চৌধুরী গত ০৫ মার্চ থেকে ০৯ মার্চ পর্যন্ত ভারতে অবস্থানকালে আইনানুগভাবে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ সরকারকে উৎখাতের জন্য বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বহিভূত রাষ্ট্র ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। যার কিছু ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আসামিরা সরকারকে অবৈধভাবে উৎখাতের জন্য দেশে সন্ত্রাস, নাশকতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করেন, যা দেশের অখণ্ডতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল।
ভারতের দিল্লি ও আগ্রার তাজমহল এলাকায় ইসরায়েলের সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোমেসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসির প্রধান লিকুদ পার্টির নেতা মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে আসলাম চৌধুরীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা-সাক্ষাতের বেশ কিছু ছবিও সম্প্রতি প্রকাশিত হলে দেশ-বিদেশে তোলপাড় চলছে।
২০০১ সালে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় এলে জিয়া পরিষদের মাধ্যমে বিএনপির রাজনীতিতে আসেন আসলাম চৌধুরী। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে সীতাকুণ্ড আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন। ২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিল তিনি উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক হন। এর আগে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। সম্প্রতি বিএনপির কেন্দ্রীয় সম্মেলন শেষে যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে তার নাম ঘোষণা করা হয়।