সর্বশেষ আপডেট



» অসচ্ছল ২২ নারীকে স্বাবলম্বী করতে প্রশিক্ষণ শেষে সেলাই মেশিন দেবে বারইয়ারহাট পৌর কর্তৃপক্ষ

» বাংলাদেশ বয়লার পরিচারক কল্যাণ এসোসিয়েশনের পিকনিক ও মিলন মেলা

» বারইয়ারহাটে উন্নত প্রযুক্তি ও বিশ্বমানের সেবার প্রত্যয়ে ২০ শয্যার বিএম হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের উদ্বোধন

» মিরসরাই এডুকেশন সোসাইটি চট্টগ্রাম’র ঈদ পুণর্মিলনী

» আবুরহাট আঞ্চলিক প্রবাসী সমিতির কমিটি ঘোষণা, আহবায়ক ইমাম উদ্দিন রনি; সদস্য সচিব সৌরভ মাজেদ ভূঁইয়া

» মিরসরাই সমিতি ওমানের উদ্যোগে ২ শতাধিক পরিবার পেল ঈদ উপহার

» মিরসরাইয়ে সাড়ে ৭ শতাধিক এতিম ও দরিদ্র শিক্ষার্থী পেল জিয়া উদ্দিন সিআইপির ঈদ উপহার

» মিরসরাই সমিতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা

» ৫ শতাধিক দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফুটালেন জিয়া উদ্দিন সিআইপি

» দুবাইয়ে মিরসরাই ইয়ুথ ফোরামের ইফতার ও দোয়া মাহফিল

» মিরসরাই সমিতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইফতার ও দোয়া মাহফিল

» ভোক্তা নিউজ রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড পেলেন মিরসরাইয়ের সন্তান গাজী টিভির তৌহিদ রানা

» পূর্ব হিঙ্গুলী মোহাম্মদপুর ইসলামিক একাডেমীর বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগীতার পুরস্কার বিতরণ

» হাইতকান্দিতে সমাজসেবক জামশেদ আলমের উদ্যোগে রমজান উপলক্ষে সাড়ে ৩ শত পরিবার পেল খাদ্য সামগ্রী

» করেরহাটে ওবায়দুল হক খোন্দকার ও নুর নাহার বেগম ফাউন্ডেশনের ইফতার সামগ্রী বিতরণ

» জিয়া উদ্দিন সিআইপিকে সংবর্ধনা

» সাহেরখালীতে দিদারুল ইসলাম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ৩ শত পরিবারের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ

» করেরহাট গেড়ামারা ছাদেক কোম্পানি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরন

» সাংবাদিকতায় গোল্ড মেডেল জিতলেন মিরসরাইয়ের তৌহিদ রানা

» সিআইপি নির্বাচিত হলেন মিরসরাইয়ের কৃতি সন্তান মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন

সম্পাদক ও প্রকাশক

এম আনোয়ার হোসেন
মোবাইলঃ ০১৭৪১-৬০০০২০, ০১৮২০-০৭২৯২০।

সম্পাদকীয় কার্যালয়ঃ

প্রিন্সিপাল সাদেকুর রহমান ভবন (দ্বিতীয় তলা), কোর্ট রোড, মিরসরাই পৌরসভা, চট্টগ্রাম।
ই-মেইলঃ press.bd@gmail.com, newsmirsarai24@gmail.com

Desing & Developed BY GS Technology Ltd
২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিরসরাই নিয়ে আমরা গর্ব করি কেন!

মঈনুল হোসেন টিপু » » » কিছুদিন আগে চট্টগ্রাম শহরের নামকরা এক স্যারের কাছে পড়তে গেছি। পরিচয় পর্বে নিজ জন্মস্থান জিজ্ঞেস করাতেই বললাম মিরসরাই। স্যার তখনই হেসে বলে উঠলো, মিরসরাইয়ের মানুষজনের একটা জিনিস দীর্ঘদিন খেয়াল করছি, দেশ বা বিদেশে যেখানেই দেখা হয় বাড়ি কোথায় জিজ্ঞেস করলে তারা চট্টগ্রাম জেলার হয়েও বলেনা চট্টগ্রাম, তারা জোর গলায় বলে মিরসরাই। কিছুক্ষণ চিন্তা করলাম, আসলেই তো স্যারের কথাই ঠিক। একটি উপজেলা হয়েও মিরসরাইকে সারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে চেনাতে কষ্ট হয় না, তাই আমরা যে মিরসরাইয়ের; এটি পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি।

মিরসরাইকে আলাদাভাবে চেনার বেশ কয়েকটি কারণ আছে বৈকি। ৪৮২.৮৮ বর্গ কিলোমিটার আয়োতন শুনেই তো অনেকেই অবাক হয়, আয়তনে যে এই উপজেলা প্রায় একটি জেলার সমান! চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বার এই উপজেলা, পার্বত্যচট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম জেলার সমগ্র অংশ, কিংবা কক্সবাজার যেতে হলে অবশ্যই এই উপজেলার সড়ক কিংবা রেলপথ কিংবা নৌপথ অতিক্রম করতেই হবে।

মিরসরাই ভূপ্রকৃতিগত দিক থেকে বেশ সমৃদ্ধ এবং আলাদা। পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরের আর পূর্বে পাহাড়ের বিশালতা, মাঝে সমতল ভূমি, এ নিয়ে আমাদের মিরসরাই। প্রকৃতি আমাদের দু’হাত ভরে সৌন্দর্য আর সম্পদ উপহার দিয়েছে।

মহামায়া লেক বর্তমানে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম লেক এবং জনপ্রিয় পর্যটন স্পট। খৈয়াছড়া ঝর্ণা দেশের অন্যতম বৃহত্তম এবং অনিন্দ্যসুন্দর ঝর্ণার একটি। নাপিত্তাছড়া আর রুপসী ঝর্ণা ভ্রমণপিপাসু এবং এডভেঞ্চার প্রিয় মানুষদের জন্য খুবই প্রিয়। বাউয়াছড়া তথা নীলাম্বর লেকের সৌন্দর্য কম কিসে? পূর্বের বিশাল পাহাড়ে আছে আবিষ্কৃত এবং অনাবিষ্কৃত অসংখ্য ঝর্ণা, আছে নানা রকমের বন্য জীবজন্তু আর গাছপালা। বারৈয়ারহাট থেকে রামগড় খাগড়াছড়ি যাওয়ার পথে পাহাড়ি দৃশ্য আর আঁকাবাঁকা পথের সৌন্দর্য যে কতটা ; যারা এ পথ দিয়ে যাতায়াত করেন তারাই জানেন।

পশ্চিমের বঙ্গোপসাগরের বিশাল ঢেউ, অসংখ্য খাল বিলের বয়ে চলা, উপকূলীয় বেড়িবাঁধ আর বনবেষ্টনী, জেগে উঠা বিস্তীর্ণ চর, হরিণের অবাদ বিচরণ এসবে কেউ মুগ্ধ না হয়ে পারবে? মুহুরি প্রজেক্ট দেশের ৬ ষ্ঠ বৃহত্তম সেচ প্রকল্প আর অন্যতম পর্যটন স্পট। ইছাখালীর চরে গড়ে উঠছে ৩৫ হাজার একরের দেশের সবচেয়ে বড় ইকোনমিক জোন, চরের বুকে ঘুরবে শিল্পের চাকা।

মুহুরি প্রজেক্ট কেন্দ্রিক বিশাল বাণিজ্যিক মৎস্য চাষ প্রকল্প গড়ে উঠেছে অনেক আগে থেকে। প্রতিদিন এখান থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নানা প্রজাতির মাছ নেয়া হয়। বারৈয়ারহাট মাছ বাজার দেশের মাছ ব্যবসায়ীদের জন্য সুপরিচিত স্থান, প্রতিদিন সকালে এখানে লাখ লাখ টাকার ব্যবসা হয়। উপকূলের রুপালী ইলিশের প্রাচুর্য আছে, নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ পাওয়া যায় উপকূলে। বিটিভির সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপনে আমরা অনেকেই দেখেছি, হাইতকান্দি ইছাখালী পয়েন্ট ইলিশের মূল প্রজননবান্ধব স্থানের একটি। যে শীতলপাটি ইউনোস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হয়েছে কিছুদিন আগে, সেই শীতলপাটির অসংখ্য কারিগর আছে মিরসরাইয়ের গ্রামে গ্রামে। শীতলপাটির জন্যও কম বিখ্যাত নয় এ অঞ্চল। পাহাড়ি বাঁশ বেতের যোগানেও বেশ এগিয়ে এ অঞ্চল। মিঠাছড়ার গরুর বাজার কুরবানির সময় বৃহত্তর চট্টগ্রামের অনেক মানুষের আস্থার নাম।

কমলদহের ড্রাইভার হোটেলের গোস পরটা সারা দেশের ড্রাইভার কাছে ভীষণ প্রিয়। উত্তরা বাসে ছড়েননি এমন কজন আছে, ছাত্রদের হাফভাড়ায় যাতায়াতের জন্য এখনো যে আস্থার নাম।

শুধু তাই নয়, মহান মুক্তিযুদ্ধে এ অঞ্চলের মানুষের বিশাল অবদান। মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হয়েছিলো এ মিরসরাই থেকেই। উপজেলা পর্যায়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি মুক্তিযোদ্ধা এ মিরসরাইয়ে।

একটি টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় আছে মিরসরাইয়ে, তিন কলেজে চালু আছে অনার্স কোর্স। নিজামপুর কলেজের ঐতিহ্য আর জৌলুস অনেকেরই জানা।

ইকোনমিক জোনের কাজ শেষ হলে মিরসরাইতে কর্মসংস্থান হবে ২০ লাখ লোকের, দেশি বিদেশি বড় বড় বিনোয়োগকারীদের চোখ এখানে। এই ইকোনমিক জোন দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখবে। আর ভ্রমণ পিপাসুদের আর এডভেঞ্চার প্রিয়দের জন্য মিরসরাই তো এখন খুবই পছন্দের স্থান। এখানকার মানুষের অতিথিপরায়ণতার কথা সবাই জানে। মিরসরাইয়ের আলাদা ভাষা, আলাদা সংস্কৃতি, আলাদা রীতিনীতি আছে।

মিরসরাইয়ান এই পরিচয়টা সত্যিই গর্বের।

(পুনশ্চ-মিরসরাইকে এখন ব্র্যান্ডিং করা খুবই প্রয়োজন। কথাটা বলছি এজন্যই, মিরসরাইয়ের যে ঝর্ণাগুলো কিংবা পর্যটন স্পটগুলো আছে তা এখনো অনেকেরই অজানা। পর্যটনবান্ধব এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য মিরসরাইয়ের সবকিছুই আছে। পাহাড় আছে, সমুদ্র আছে, ঝর্ণা আছে, এখন দরকার কার্যকর পরিকল্পনা। আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, প্রতিটি এলাকার আলাদা বৈশিষ্ট্য সবগুলো আমাদের তুলে ধরতে হবে।

আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যেটি আমার কাছে খুবই চ্যালেঞ্জিং মনে হয়, সেটি হলো- আমাদের প্রাকৃতিক প্রাচুর্যকে রক্ষা করার ব্যাপারটি, পরিবেশ রক্ষার ব্যাপারটি। ইকোনোমিক জোন হচ্ছে আমরা ভীষণ খুশি, কিন্তু সেটা বর্তমানে যে ইছাখালীর চর আছে সেখানে নির্দিষ্ট স্থানেই যেন সীমাবদ্ধ থাকে। আমাদের উপকূলের বনবেষ্টনী, ম্যানগ্রোভ বন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেন বিনষ্ট না হয়, ইলিশের প্রজনন কেন্দ্র যাতে নষ্ট না হয়। মিরসরাইয়ের ইকোট্যুরিজমের বিশাল সম্ভাবনা আছে, আমাদের পাহাড়গুলোতে কি মূল্যবান সম্পদ আছে তা আমরা সাধারণভাবে অনুভব করতে পারব না।

আমি মিরসরাইয়ে মাত্রাতিরিক্ত শিল্পায়ন চাইনা, পরিমিত পরিবেশবান্ধব শিল্পায়ন চাই যেটা ইকোনোমিক জোন কেন্দ্রিক সরকার চিন্তা করছে। মনে রাখতে হবে লোভ আর অর্থের কাছে আমাদের গর্বের জায়গাগুলো যেন না হারায়। সারা দেশের কর্পোরেট হাউস, শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য খুবই লুক্রেটিভ জায়গা এই মিরসরাই। তাদের লোভাতুর দৃষ্টির ফলে যেন আমাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই জন্মভূমি যেন ইট পাথরের টুপরি, ধোয়া আর শব্দের নগরী না হয়। আমাদের গ্রামগুলো গ্রামই থাক, নগর হয়ে না উঠুক।)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



সম্পাদক ও প্রকাশক

এম আনোয়ার হোসেন
মোবাইলঃ ০১৭৪১-৬০০০২০, ০১৮২০-০৭২৯২০।

সম্পাদকীয় কার্যালয়ঃ

প্রিন্সিপাল সাদেকুর রহমান ভবন (দ্বিতীয় তলা), কোর্ট রোড, মিরসরাই পৌরসভা, চট্টগ্রাম।
ই-মেইলঃ press.bd@gmail.com, newsmirsarai24@gmail.com

Design & Developed BY GS Technology Ltd