খাজা মঈন উদ্দীন >>>>> নির্বাচন আসলে প্রার্থীতা নিয়ে যেভাবে লাফালাফি। বুঝিনা সেখানে কি মধু আছে। যোগ্যতা আছে, নাই তা দেখার সময় নাই। লোকে চিনে কিনা, জনপ্রিয়তা কতটুকু আছে তা অবশ্যই প্রার্থী জানে, কিন্তু প্রার্থী হয় নাকি পরিচয় দেয়ার জন্য। প্রার্থী হওয়ার আগে একজন জনপ্রতিনিধিকে ভাবতে হবে সমাজে তার ভুমিকা কতটুকু, দায়িত্ববোধ কতটুকু, সমাজ সংস্কারে, গরিব-দুঃখির বোবা কান্না কতটুকু ভাগাভাগি করেছেন। ভোটে প্রার্থী হয়ে পরিচয় লাভ করা কি সব? এটাতো শুধু মাত্র সস্তা পরিচিতি লাভ করার জন্য র্নিলজ্জ চেষ্টা করা। এধরনের ব্যক্তি কখনো জনসেবার ধারে কাছে থাকবেনা আগেও ছিলেননা। হাস্যকর একটা প্রচেষ্টা! এমন পরিচিতির দরকার কিসের? আপনার যোগ্যতা কতটুকু? এমন প্রতিযোগিতায় আপনার হাজারবার চেষ্টাও একবারের জন্য কাজে আসবেনা। পারলে নিজের আশ-পাশের নিঃস্ব, দুস্থদের খোঁজ নেন, তাদের সাথে ভালো ভালো আচরন করুন। সাধ্যমতো সাহায্য সহযোগিতা করুন। এটা আপনার দুনিয়া আখেরাতের কাজে আসবে।
আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা কালামে পাকে এরশাদ করেন-
: وَاعْبُدُوا اللَّهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا وَبِذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَالْجَارِ ذِي الْقُرْبَى وَالْجَارِ الْجُنُبِ- النساء:36
অথ্যাৎ: তোমরা আল্লাহর এবাদত কর, তাঁর সাথে শরিক করোনা, পিতা-মাতার প্রতি সৎ ও সদয় ব্যবহার কর। নিকটাত্বীয়, এতিম, মিসকিন, প্রতিবেশীদের প্রতি সদয় ব্যবহার কর। সুরা নিসা-৩৬
পবিত্র হাদিসে পাকে এরশাদ হচ্ছে-
عن أَبي شُريْحٍ الخُزاعيِّ : أَنَّ النَّبيَّ ﷺ قَالَ: مَنْ كَانَ يُؤمِنُ بِاللَّهِ والْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيُحْسِنْ إلى جارِهِ، ومَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ واليومِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ، ومَنْ كانَ يُؤمنُ باللَّهِ واليومِ الآخرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَسْكُتْ رواه مسلم بهذا اللفظ، وروى البخاري بعضه.
হযরত সুরাইহ আল খুযায়ী থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমান- যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে এবং আখেরাতে বিশ্বাস স্থাপন করে সে যেন তার প্রতিবেশির প্রতি সদয় আচরন করেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে এবং আখেরাতে বিশ্বাস স্থাপন করে সে যেন তার আত্মীয়ের প্রতি সদয় আচরন করেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে এবং আখেরাতে বিশ্বাস স্থাপন করে সে যেন উত্তম কথা বলে অথবা চুপ থাকে। (মুসলিম/বুখারী)।
কোরান –হাদিসে এ বিষয়ে বহু নির্দেশনা আছে, লিখতে গেলে কলেবর বড় হযে যাবে।
গোলাপ যেখানেই ফুটুক খুশবু ছড়াবেই। যে সব প্রার্থীগণ প্রার্থীতা নিয়ে লাফালাফি করছেন তাঁরা কি গোলাপের খুশবু ছড়াতে পেরেছেন? আগে নিজের সাধ্যমতো এলাকার দুস্থ পরিবারের সাহয্য সহায়তা করুন, তাদের দুঃখে দুঃখি হওয়ার চেষ্টা করুন। দাম্ভিকতা অহংকার থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুন। সামাজিক কাজে নিজেকে নিয়োজিত করার চেষ্টা করুন। এলাকার উন্নয়নে আপনার শারীরিক, অর্থিক, মানসিক সব ধরনের সম্পৃক্ততা রাখুন। কখনো কামনা থাকবেনা যে এলাকায় আমি ভবিষ্যতে প্রাথী হবো সুতরাং আমার কর্মে জন সমর্থন আমার পক্ষে আসবে যা এক ধরনের অহমিকা (রিয়া) সেটা হবে প্রতারনা।
অনেকে বলে, সংসদে না গেলে প্রতিনিধিত্ব করা যায়না। তা আমি বিশ্বাস করিনা। জনগণের পাশে থেকে জনগনের মনোজগতে নিজেকে মিশিয়ে দিয়ে একাকার হয়ে সার্বিক সাধ্য মতো উন্নয়নে অংশিদার হওয়াতে আনন্দ। যারা এরকম করে তারা তা উপলদ্ধি করে। বরং প্রতিনিধি হয়ে শুধু প্রতারনা করেই যায়।।
অনেক নির্বাচনতো দেখলাম, বহু এমপি মন্ত্রী দেখা হলো কই ভাগ্যের উন্নয়ন কি জাতির হয়েছে। নির্বাচন আসলে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি, জিতলে কার খবর কে রাখে। নির্বাচন আসলে নিবাচনী এলকার এমন রাস্তা থাকেনা যার ধুলা প্রাথীর পা ষ্পর্শ (একবার নয় বারবার) করেনি, নির্বাচন গেলে পাঁচ বছরে তার সময় হয়না একবার এলাকার লোকদের খবর নেয়ার। এমন প্রতারনা করে জাতিকে আর কত ঠকানো হবে।
হক্ব প্রতিষ্ঠার জন্য বাতিলকে সাথে নিয়ে আন্দোলন এ যেন ক্ষুধা নিবারনে মাকাল ফল আহার করা। বিশ্বাস হয়না কখনো হক্বপন্থীদের উদেশ্য সাধন হবে। বরং কিছু ব্যক্তি বিশেষের সংসদে পা রাখার ব্যবস্থা হলে হতেও পারে। কিন্তু সরওয়ারে কায়েনাত সাইয়্যেদে আলম পাক রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদর্শ বাস্তবায়নে যে পদক্ষেপ বা কর্মপন্থা ঠিক করার দরকার তার কিছুই হবেনা। জানিনা হয়ত আমার ভুলও হতে পারে। যার ভুমিকা সংসদে বলিষ্ঠ হবে তার ভুমিকা সব জায়গায় বলিষ্ঠ হবে। মদিনার নুরের খুশবু নিজ নিজ পরিসরে ছড়িয়ে দিলে জনতা শুধু তাঁকেই কামনা করবেন। অলী-গাউস, কুতুব, আবদাল যাঁরা পৃথিবী ব্যাপী মদিনার খুশবু ছড়িয়েছেন তাঁরা প্রতিনিধিত্বের জন্য দৌড়ঝাপ করেছেন এমন তথ্য আমার জানা নাই বরং মদিনাওয়ালার দয়ায় তাঁর অনুসারী গুণীরা আজো সবার মনোজগতে বেঁচে আছেন এমনকি কেয়ামত পর্যন্ত বেঁচে থাকবেন। তাঁদের আবাদ করা জমিনে আমরা ফ্রক্সি দেয়ার চেষ্টায় মত্ত অথচ নিজের চরিত্রটাই ঠিক করতে পারিনাই। নিজের ভেতর চরম দুর্গন্ধ রয়েছে সেটা দুর করতে পারিনাই খুশবুর জায়গা কিভাবে তৈরী হবে। সুতরাং নিজের অবস্থান জনতার অন্তরে সৃষ্টি করার জন্য কঠোরভাবে সঠিক আদর্শ বাস্তবায়নে চেষ্টা করে যেতে হবে। জনতা জোর করে সংসদে বসিয়ে দিবে। যারা নিজেরা চায় যে সংসদে বসতে তারা আদৌ যোগ্য কিনা ভাবার বিষয়।
অর্থ সম্পদ হলে নির্বাচনের সময় তা অকাতরে বিলি করে সংসদ প্রতিনিধি হলো, পরিচয় লাভ করলো, জনতার মাথা কেটে বরাদ্ধ করা সহায়তা চুরি চামারি করে সম্পদের পাহাড়কে আরো বড় করলো। একদিন খোদার সিডরে তার কেল্লাফতে হয়ে সব শেষ। ফলাফল জিরো।
রিয়াদ –সৌদি আরব, ২৫/১০/২০১৮
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- » জমকালো আয়োজনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যায় প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী সমিতি-৮২ এর রজতজয়ন্তী উদযাপন, এ যেন বন্ধুদের প্রাণের সম্মিলন
- » মিরসরাইয়ের দুই কৃর্তিমান সাহাব উদ্দিন ও আলা উদ্দিনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
- » স্মৃতিতে অমলিন বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহাব উদ্দিন-এম জামশেদ আহমেদ
- » স্মৃতিতে সড়কে নিভে যাওয়া আলা উদ্দিন : মধ্যম মুরাদপুর থেকে ধানমন্ডি ২৭
- » মহিয়সী নারী জাহানারা চৌধুরী লাকীর চিরবিদায়; স্মৃতি রোমন্থন
- » মুক্তিযুদ্ধ ও মীরসরাইয়ের যুবশক্তি
- » লেখাপড়া ও বিতর্কে মিরসরাইয়ের সন্তান সানজিদের অভুতপূর্ব সাফল্য
- » চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমন ও মৃত্যুর ভয়াবহতা
- » না ফেরার দেশে চলে গেলেন কিশোর মুক্তিযোদ্ধা প্রিয় জামসেদ আলম
- » রোহিঙ্গা: বিষফোঁড়া এখনই দূর করতে হবে