নিজস্ব প্রতিনিধি, মিরসরাই নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম » » » করোনার প্রাক্কালে মিরসরাইয়ের কিছু মানবিক মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে উঠা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শেষ বিদায়ের বন্ধু। করোনায় মৃতদের পাশে দাঁড়াচ্ছিলেন না স্বজনরা। এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের জীবন বাজী রেখে এই সংগঠনের সূচনা করেন তারা। অন্তিমযাত্রায় মিরসরাই, ফেনীসহ আশপাশের এলাকার ভরসাস্থল হয়ে উঠেছে সংগঠনটি। ইতিমধ্যে সংগঠনের একটি এ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজনীতা উপলব্ধি করেন সংগঠন সংশ্লিষ্টরা। তাই সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুকে এ্যাম্বুলেন্স ক্রয়ের জন্য অনুদান চেয়ে পোস্ট করে আসছিলেন সংগঠন সংশ্লিষ্টরা এবং শুভাকাঙ্খীরা। তারই জের ধরে একে একে অনুদান দিয়ে এ্যাম্বুলেন্স ক্রয় ফান্ডকে সমৃদ্ধ করে যাচ্ছেন ধনী, গরীব, মধ্যবিত্ত, শিক্ষার্থীসহ নানা পেশার মানুষজন। আজোবধি অনুদান প্রদানের মধ্যে ৪ টি ঘটনা ব্যতিক্রম রয়েছে। আর ৪ টি ঘটনার সূচনাকারীরাই শিক্ষার্থী। তাদের এই অনুদান দেওয়ার বিষয়টি বেশ প্রশংসিত হয়েছে। নিম্মে ঘটনাগুলো তুলে ধরা হলো
ঘটনা -১ ও ২ ঈদ সেলামীও বাবা-মা থেকে খরচের জন্য নেওয়া ৫ হাজার ৪ শত টাকা দিল শিক্ষার্থী দুই ভাই-বোন: চট্টগ্রাম হালিশহরের আলহাজ্ব ইয়াকুব আলী উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের নবম শ্রেনীর ছাত্রী আইনুন জারিয়া অনন্যা ও তার ছোট ভাই তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্র আজমাইন মাহতাব অপূর্ব। দুই ভাই-বোন এবার ঈদ সেলামীর টাকা জমিয়েছিল। মাঝে মাঝে বাবা-মা থেকেও কিছু নিয়ে জমিয়েছেন। করোনায় মানুষের জন্য মানবিক কাজে বাবার দিনরাত পরিশ্রম তাদের পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত করেছে। আগের মতো বাবা ঘরে আসলে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে পারেনা। তবুও তারা খুশি। তাদের বাবার আদর্শে তারা জীবনে বাবার মতো মানবসেবা করতে চায়। সে সুযোগ পেয়ে যায় শেষ বিদায়ের বন্ধু সংগঠনের এ্যাম্বুলেন্স ক্রয় তহবিল সংগ্রহের কথা শুনে। অনন্যার ৩ হাজার ও অপূর্বর ২ হাজার ৪ শত ঈদ সেলামি ও জমানো ৫ হাজার ৪ শত টাকা তুলে দেন বাবার হাতে। বাবা মানবিক সংগঠন শেষ বিদায়ের বন্ধু প্রতিষ্ঠাতা সমন্বয়কারী আলহাজ্ব নিজাম উদ্দিন। বাবাকে ছেলে মেয়ের আদর্শ, মানবিক হওয়ার মানসিকতা দেখে অশ্রুসিক্ত করে। তিনি শেষ বিদায়ের বন্ধু সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান সমন্বয়কারী সাংবাদিক নুরুল আলম এর হাতে এ টাকা তুলে দেন। নুরুল আলম শেষ বিদায়ের বন্ধু সংগঠনের পক্ষ থেকে দুই ভাই-বোনের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে আশা প্রকাশ করে বলেন, একদিন তারা আলোকিত মানুষ হয়ে দেশের সেবা মানুষের সেবা দিয়ে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে মা বাবার মন বড় করবে। মানবতার দৃষ্টান্ত হয়ে মিরসরাইয়ের সুনাম ছড়াবে।
ঘটনা-৩ মোহনার উপবৃত্তির ৫ হাজার টাকা: অল্প অল্প করে সরকারি উপবৃত্তির টাকাগুলো জমিয়ে টাকার অংক বাড়ানোর চেষ্টা করছে মোহনা। পুরো নাম ইসরাত জাহান মোহনা। মিরসরাই উপজেলার সুনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জেবি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী সে। পিতা মফিজুল ইসলাম, মাতা আসমা বেগম, গ্রাম শেখের তালুক, মঘাদিয়া। বাবা শিক্ষকতা পেশায় মিরসরাই উপজেলায় এক নামেই পরিচিত। ছোটবেলা থেকেই বাবার মুখে সততা ন্যায়নীতি, আদর্শ মানুষের গল্প শুনে বেড়ে উঠে মোহনা। বাবার আদর্শ তার জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। বাবার কাছ থেকেই সৎ চিন্তা, মানুষের কল্যাণে কিছু করার স্বপ্ন জাগে তার মনে। কখনো বৃত্তির এ টাকা থেকে নিজের জন্য খরচ করেনি। মা বাবাকেও বলেনি কেন নিজে এতো কষ্ট করে বৃত্তির টাকাগুলো সঞ্চয় করছে। নিজের কত সাধ আহ্লাদ মনে লুকিয়ে রেখেছে। মনে মনে স্বপ্ন দেখে সুযোগ পেলে জীবনের শ্রেষ্ঠ কাজ মানবকল্যাণে দান করবে। সে কাঙ্খিত সুযোগের খোঁজ পেয়ে যায় মোহনা। আত্নমানবতার সেবায় প্রতিষ্ঠিত শেষ বিদায়ের বন্ধু সংগঠনের শ্রেষ্ঠ মানবসেবা তার কাছে খুব ভালো লাগে। বাবাকে বলে সঞ্চয়ের জমা ৫ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেয় শেষ বিদায়ের বন্ধু সংগঠনের এম্বুল্যান্স ক্রয় তহবিলের জন্য। অবশেষে মোহনার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
ঘটনা-৪ মুশফিকার জন্মদিন অনুষ্ঠানের ৫ হাজার টাকা: সেদিন ছিল মিরসরাই মারুফ মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেনীর ছাত্রী মুশফিকা আনোয়ারার শুভ জন্মদিন। কিন্তু এবার জন্মদিনের কোন আনুষ্ঠানিকতা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুশফিকা। বাবা মায়ের আদরের মেয়ে মায়ের কাছেই শিখেছে মানবিকতা। মানুষের দুঃখ কষ্ট তাকে ব্যাথিত করে। অসহায় মানুষের জন্য কিছু করার ইচ্ছে অনেকদিনের। সে সুযোগ আসে তার জন্মদিনে। বাবাকে বলে জন্মদিনের জন্য খরচের ৫ হাজার টাকা পাঠিয়েছে শেষ বিদায়ের বন্ধু সংগঠনের এম্বুলেন্স ক্রয় তহবিলে।
শেষ বিদায়ের বন্ধু সংগঠন কতৃপক্ষ জানান, শেষ বিদায়ের বন্ধু পরিবার কৃতজ্ঞ অনন্যা, অপূর্ব, মোহনা ও মুশফিকার মত যারা গত কয়েকদিন স্ব-প্রণোদিত হয়ে মানবিক সেবায় এগিয়ে এসে আমাদের স্বপ্নের এ্যাম্বুলেন্স ক্রয় তহবিলে আর্থিক অনুদান প্রদান করে স্বপ্নকে বাস্তবতার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছেন। ইনশাল্লাহ শেষ বিদায়ের বন্ধুর এ্যাম্বুলেন্স ও আমাদের পরবর্তী প্রকল্প করোনায় মৃতদের লাশ গোসলের জন্য ১ টি স্থায়ী ভবন নির্মাণ কার্যক্রমও আমরা অতি শীঘ্রই শুরু করতে পারবো বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। তাই চাই সকলের সমবেত অংশগ্রহণ।
অনন্যা, অপূর্ব, মোহনা ও মুশফিকার মতো যেকেউ শেষ বিদায়ের বন্ধু সংগঠনের এ্যাম্বুলেন্স ক্রয় তহবিলে অনুদান প্রদান করতে চাইলে যোগাযোগ করুন:
শেষ বিদায়ের বন্ধু’র ব্যাংক একাউন্ট:
A/C Name: SES BIDAYER BONDU
A/C No: 8888204574572001
Bank Name: BRAC BANK LTD
Branch: Agent Banking/ Head Office
Routing No:
060270609 (Agent Banking)
060270388 (Head Office)
Swift Code: BRAKBDDH
বিকাশ ও রকেট নম্বর:
বিকাশ: 01726-301123 (Personal)
• 01819-107171 (Personal)
• 01819-614821 (Personal)
রকেট: 01713-213016 (Personal)
শেষ বিদায়ের বন্ধু: অস্থায়ী কার্যালয়: দারুল উলূম মাদ্রাসা, ওয়ার্লেস (সুফিয়া রোড়), মিরসরাই, চট্টগ্রাম, অফিস মোবাইল: ০১৮৪১-৬৭৭৫০৭
মোবাইল: ০১৮১৯-১৭৪৮৪৮, ০১৮১৯-১০৭১৭১, ০১৮১৫-৬০৪৭২৩
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- » অসচ্ছল ২২ নারীকে স্বাবলম্বী করতে প্রশিক্ষণ শেষে সেলাই মেশিন দেবে বারইয়ারহাট পৌর কর্তৃপক্ষ
- » বাংলাদেশ বয়লার পরিচারক কল্যাণ এসোসিয়েশনের পিকনিক ও মিলন মেলা
- » বারইয়ারহাটে উন্নত প্রযুক্তি ও বিশ্বমানের সেবার প্রত্যয়ে ২০ শয্যার বিএম হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের উদ্বোধন
- » মিরসরাই এডুকেশন সোসাইটি চট্টগ্রাম’র ঈদ পুণর্মিলনী
- » আবুরহাট আঞ্চলিক প্রবাসী সমিতির কমিটি ঘোষণা, আহবায়ক ইমাম উদ্দিন রনি; সদস্য সচিব সৌরভ মাজেদ ভূঁইয়া
- » মিরসরাই সমিতি ওমানের উদ্যোগে ২ শতাধিক পরিবার পেল ঈদ উপহার
- » মিরসরাইয়ে সাড়ে ৭ শতাধিক এতিম ও দরিদ্র শিক্ষার্থী পেল জিয়া উদ্দিন সিআইপির ঈদ উপহার
- » মিরসরাই সমিতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা
- » ৫ শতাধিক দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফুটালেন জিয়া উদ্দিন সিআইপি
- » দুবাইয়ে মিরসরাই ইয়ুথ ফোরামের ইফতার ও দোয়া মাহফিল